শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে দেশে স্বৈরাচার সরকারের পতনের খবর ছড়ির পড়ার পরপরই রাঙামাটি শহরে রাজপথে নেমে বিজয় মিছিল করেন মানুষ। মিছিল থেকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। উচ্ছৃঙ্খল জনতা পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের মারধর, গাড়ি ভাঙচুর করে। সাংবাদিকদের বাড়িতেও হামলা ও ভাঙচুর করা হয়।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ভবন, পৌর মেয়রের বাসভবন, বনরুপাস্থ পুলিশ বক্স ভাঙচুর করা হয়। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে মিছিলকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে উচ্ছৃঙ্খল যুবক দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার সত্রং চাকমা ও ডেইলি স্টারের রাঙামাটি প্রতিনিধি লালতন পাংখোয়াকে মারধর করে। এ সময় দুর্বৃত্তরা তাদের মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যায়। একই দিন সন্ধ্যায় সাংবাদিক এম কামাল উদ্দিনের ভাড়া বাসায় গিয়ে হামলা চালায় ২০ থেকে ৩০ জনের দুর্বৃত্ত দল। দুর্বৃত্তরা সাংবাদিক কামালের স্ত্রী ও সন্তানদের বেদম মারধর করে। এ ছাড়া গত বুধবার দুপুরের দিকে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের রাঙামাটি প্রতিনিধি ফাতেমা জান্নাত মুমুর বাসায় হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। হামলা হয় বাসস ও চ্যানেল আইয়ের প্রতিনিধি সাংবাদিক মনছুর আহমেদের বাসায়। সাংবাদিক মো. মনছুর আহমেদ বলেন, ‘যারা হামলা করেছে তারা চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের নামে আগেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তারা এখন এ সুযোগে লুটপাটে নেমেছে।’
সাংবাদিক কামাল বলেন, ‘আমি কোনো দল করি না। আমার ধারণা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছে কেউ, পূর্ব আক্রোশের জেরে আমাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে বাসায় গিয়ে হামলা চালিয়েছে।’
রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘হামলা ভাঙচুর করে কোনো সন্ত্রাসী গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতিরোধ করতে পারবে না। হামলাকারীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা দরকার।’
সাংবাদিকের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা বলেন, ‘বিজয় উল্লাসের নামে দায়িত্বশীল সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা কখনও মেনে নেওয়া যায় না। এ ধরনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’